প্রবাসে বাংলাদেশিদের নিজেদের সংস্কৃতির সঙ্গে সংযুক্ত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বিভিন্ন বাংলাদেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। জার্মানির এসেন শহরে অবস্থিত “আনিসা সুপারমার্কেট” এবং ডর্টমুন্ডের “বাংলা বাজার”— এমন দুটি প্রতিষ্ঠান যা সেখানকার বাংলাদেশিদের কাছে ঘরের মতোই পরিচিত। এই দোকানগুলো শুধু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যই নয়, বরং যেন এক টুকরো বাংলাদেশকে তুলে ধরেছে প্রবাসে।
আনিসা সুপারমার্কেট, এসেন
জার্মানির এসেন শহরে অবস্থিত আনিসা সুপারমার্কেট সেখানকার বাংলাদেশি এবং দক্ষিণ এশীয় সম্প্রদায়ের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই সুপারমার্কেটটি তার ওয়েবসাইটেও নিজেকে “বাংলাদেশি সুপারমার্কেট” হিসেবে পরিচয় দেয়। এখানে চাল, ডাল, মাছ, মাংস, দেশীয় মশলা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের জনপ্রিয় স্ন্যাকস ও তৈরি খাবারসহ সব ধরনের পণ্য পাওয়া যায়। প্রবাসীরা এখানে এসে যেন নিজ দেশের স্বাদ খুঁজে পান। বিশেষ করে বাংলাদেশি টাটকা মাছ এবং সবজির একটি বড় সংগ্রহ তাদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়।
বাংলা বাজার, ডর্টমুন্ড
ডর্টমুন্ডের “বাংলা বাজার” আদতে ঢাকার বাংলা বাজার নাম থেকেই নেয়া। নামেই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে এই দোকানটি বাঙালি সংস্কৃতির ও ঐতিহ্যের ধারক। এই বাজারটি স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির জন্য একটি অপরিহার্য কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। “বাংলা বাজার” নামের অন্যান্য শাখাগুলোর মতোই ডর্টমুন্ডের এই দোকানটিতেও আছে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্য ও খাদ্যদ্রব্যের বিশাল সম্ভার। এখানে পাওয়া যায় রকমারি শাকসবজি, শুঁটকি, এবং অন্যান্য বিরল দেশীয় পণ্য যা জার্মানির সাধারণ দোকানে সহজে মেলে না। এখানকার বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ এবং বাংলাদেশি পণ্যগুলো প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকেও দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।
বলা বাহুল্য বিদেশ-বিভূঁইয়ের এই দোকানগুলো কেবল বাণিজ্যিকভাবেই সফল নয়, বরং সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধনেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এসেন এবং ডর্টমুন্ডের মতো শহরগুলোতে বাংলাদেশি মালিকানাধীন এই সুপারমার্কেটগুলো প্রমাণ করছে ধীরে ধীরে বাংলাদেশিরা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে দেশ ও প্রবাসের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে শুরু করেছে। তাছাড়া এসব দোকানগুলোর মাধ্যমে দূরদেশে থেকেও প্রবাসীরা দেশীয় রীতিনীতি ও খাদ্যভ্যাস ধরে রাখতে পারছেন। বিদেশেও বাংলাদেশিরা নিজেদের কঠোর পরিশ্রম ও উদ্যোক্তা মনোভাবের মাধ্যমে সফলভাবে ব্যবসা পরিচালনা করে দেশের মুখ উজ্জ্বল করছেন।