বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা আজ শুধু শ্রম আর মেধা নয়, উদ্ভাবন আর উদ্যোগ দিয়েও বদলে দিচ্ছেন নানা দেশের অর্থনীতির চেহারা। পর্তুগালের প্রাণকেন্দ্র লিসবন- ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল নিদর্শন। এই শহরের প্রতিটি অলিতে গলিতে মিশে আছে শত শত বছরের গল্প-সৃতি । সম্প্রতি লিসবনের গ্রাসা এলাকায় স্থানীয় পর্তুগিজ খাবারের একটি রেস্তোরার যাত্রা শুরু করার মাধ্যমে তেমনই এক অনুপ্রেরণার গল্প তৈরি করেছেন বাংলাদেশের আবু ইমন। উদ্বোধনের পর থেকেই ‘ব্রাঞ্চ এন্ড ব্রাইটস’’ নামের এই রেস্তোরাটি স্থানীয় ভোজনপ্রিয় থেক শুরু করে পর্যটক সবার নজর কাড়ছে।
এই রেস্তোরাঁর সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো এর নান্দনিক ইন্টেরিয়র ডিজাইন। চোখ মেললেই দেখা মেলে দেয়ালে ঝুলানো বাংলাদেশের এক প্রতিভাবান শিল্পীর আঁকা অনন্য সব চিত্রকর্ম। প্রতিটি তুলির টানে ফুটে উঠেছে সংস্কৃতি, আবেগ আর গল্পের রঙিন ছোঁয়া। শুধু তাই নয়, মাথার ওপরে তাকালে চোখে পড়বে! ছাদজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মনোমুগ্ধকর আর্ট ইনস্টলেশন, যা রেস্তোরার পরিবেশে এনেছে এক শিল্পময় আবহ। ফলে এই নান্দনিক এবং শিল্পঘন পরিবেশই রেস্তোরাঁকে করেছে অনন্য ও আকর্ষণীয়— যেখানে খাবারের স্বাদ যেমন মুখে লেগে থাকে, তেমনি সৌন্দর্যের ছোঁয়া থাকে মনে।
এখানে পরিবেশন করা হয় স্থানীয় পর্তুগিজ বিভিন্ন ডিশসহ অন্যান্য দেশের বিখ্যাত খাবারও। বাংলাদেশী দক্ষ শেফ দ্বারা তৈরি হয়ে থাকে এইসব খাবারের মেনু। আবু ইমনের এই উদ্যোগের ফলে স্থানীয় কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়। পর্তুগিজদের পাশাপাশি বাংলাদেশীসহ কাজ করছেন বিভিন্ন দেশের পেশাদার শেফ ও কর্মীরা।
বাংলাদেশি যুবকের এই উদ্দ্যেগ শুধু খাবারের জায়গা নয়, এটি হয়ে উঠেছে দুই সংস্কৃতির এক মিলনস্থল— যেখানে বাংলাদেশিদের অধ্যবসায় আর পর্তুগিজ ঐতিহ্যের এক অভাবনীয় সমন্বয়।
ইমন-এর এই পথচলা প্রমাণ করে—দেশ ছেড়ে এলেও শিকড় কখনো হারায় না। বরং সেই শিকড় থেকেই জন্ম নেয় নতুন কিছু, নতুন সম্ভাবনা। পর্যটনখাতে তার এই অনন্য অবদান এবং এই সাফল্য যেন অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে বিশ্বের অন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্যও। আর এভাবেই বিশ্ব মানচিত্রে ছড়িয়ে পড়ুক আরও অনেক ‘বাংলাদেশির স্বপ্ন’।