পর্তুগালে অভিবাসন নীতি নিয়ে বড় ধরনের আইনি টানাপোড়ন শুরু হয়েছে। গত ১৬ই জুলাই সংসদে পাশ হওয়া নতুন অভিবাসী আইন নিয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন রাষ্ট্রপতি মার্সেলো রেবেলো দে সুজা। তিনি ২৪ জুলাই আইনটি দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালতে পাঠিয়ে জরুরি ভিত্তিতে এর সাংবিধানিকতা পর্যালোচনার অনুরোধ করেছেন।
রাষ্ট্রপতির দফতর জানিয়েছে, নতুন আইনের কিছু ধারা নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি তৈরি করছে। বিশেষত পরিবার পুনর্মিলনের অধিকার সীমিত করা, অভিবাসন সংস্থার আবেদনের সময়সীমা নির্ধারণ এবং আপিলের সুযোগ সংকোচিত করার বিষয়গুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
গত সপ্তাহে ডানপন্থী দলগুলোর সমর্থনে সংসদে আইনটি পাশ হয়। পিএসডি(PSD), সেগা ও সিডিএস-পিপি (CDS-PP) আইনটির পক্ষে ভোট দিলেও সমাজতান্ত্রিক ও বাম ঘরানার দলগুলো এর বিপক্ষে অবস্থান নেয়। তবে আইএল (IL) নামক একটি দল ভোটদানে বিরত থাকে।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, পর্তুগালে কেবল দক্ষ পেশাজীবীরাই কাজ খোঁজার জন্য ভিসা পাবেন। পরিবার পুনর্মিলনের অধিকারও নির্দিষ্ট রেসিডেন্স পারমিটধারীদের জন্য সীমাবদ্ধ থাকবে। এমনকি পর্তুগিজ ভাষাভাষী দেশগুলোর নাগরিকদের ক্ষেত্রেও আবাসনের নিয়ম কঠোর করা হয়েছে। স্বল্প মেয়াদের ভিসায় আর প্রবেশ সম্ভব হবে না। প্রয়োজন হবে পূর্ণাঙ্গ রেসিডেন্স ভিসা। রাষ্ট্রপতি মনে করেন, এই ধারা মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করতে পারে। আদালতের রায়ই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করবে।
তবে এটি প্রথমবার নয়; এর আগে মার্সেলো আটবার সাংবিধানিক আদালতে এমন পর্যালোচনার আবেদন করেছিলেন, যার মধ্যে পাঁচবার আদালত সংশ্লিষ্ট আইনগুলোকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। এবার আদালতের সিদ্ধান্ত কী হবে, তা নিয়ে বিশেষত অভিবাসীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
রায় ঘোষণার আগে নতুন আইন কার্যকর হচ্ছে না। যদি আদালত আইনটিকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে, প্রেসিডেন্ট তা বাতিল বা সংশোধনের জন্য সংসদে ফেরত পাঠাতে পারেন।
বর্তমানে শুধু পর্তুগাল নয়, ইউরোপের অনেক দেশেই অভিবাসন ইস্যু রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে। ফলে পর্তুগালের এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের অভিবাসন নীতি নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।